আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাশিয়ার সহায়তা ঘোষণা
- By Jamini Roy --
- 26 November, 2024
রাশিয়া আফগানিস্তানে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন দেশটির শক্তিশালী নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান সার্গেই শোইগু। গত সোমবার কাবুলে তালেবান সরকারের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শোইগু আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও পুনর্গঠনের বিষয়ে রাশিয়ার সহযোগিতা প্রদান করার কথা জানান। বৈঠকে শোইগুর নেতৃত্বে একটি রুশ প্রতিনিধি দল এবং তালেবান সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী আবদুল গনি বারাদার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে শোইগু বলেন, মার্কিন সেনারা দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে নিয়োজিত ছিল। সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা। তিনি আরও বলেন, “আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের দায়দায়িত্ব নেওয়া উচিত, কারণ দেশটিতে তার দীর্ঘকালীন উপস্থিতির পর পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।” তিনি বলেন, আফগানিস্তানের সম্পদ ও তহবিল ফেরত দেওয়ার জন্য পশ্চিমাদের দায়বদ্ধতা থাকা উচিত, তবে তা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এর ফলে রাশিয়া আফগানিস্তানে অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও মানবিক সহায়তার প্রক্রিয়ায় সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছে।
এদিকে, তালেবান নেতারা আফগানিস্তানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার চাপ কমানোর জন্য রাশিয়ার সহায়তা চেয়েছেন। তালেবান সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী আবদুল গনি বারাদার শোইগুকে জানিয়েছেন যে, তারা আফগান পণ্যের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি এবং বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছেন, তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে তা সফল হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সহায়তার প্রতি তালেবান সরকারের আগ্রহ দেখা যায়।
শোইগু তার বক্তব্যে আরও বলেন, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ সংকটের সমাধানে একটি গঠনমূলক রাজনৈতিক সংলাপ আয়োজনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তার মতে, এমন সংলাপ আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সংকটের সমাধানে সহায়ক হবে।
এছাড়া, রাশিয়া তার অবস্থান থেকে জানিয়ে দিয়েছে যে, যদি যুক্তরাষ্ট্র এশিয়াতে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে, তবে রাশিয়া একই ধরনের ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত থাকবে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর পশ্চিমী দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তবে রাশিয়া এখন আফগানিস্তানসহ এশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার চেষ্টা করছে।
এভাবে, রাশিয়া আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে সহযোগিতা প্রদান করে বিশ্ব রাজনীতিতে তার প্রভাব বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে, আর তালেবান সরকার তাদের আন্তর্জাতিক অবস্থান উন্নত করতে সহায়তা চাইছে।